মাত্র ৯৪,৯০০ টাকায় ইলেকট্রিক বাইক: বর্তমানে আপনি যদি একজন সচেতন নাগরিক হয়ে থাকেন এবং পরিবেশের ভালোর জন্য একটি বাইক কিনতে চান তাহলে আপনার সবচেয়ে উত্তম নির্বাচন হবে একটি ইলেকট্রিক বাইক কেনা।

একটি ইলেকট্রিক বাইক রয়েছে অনেক ধরনের সুবিধা। আপনি যদি দৈনন্দিন যাতায়াতের খরচ বাচাতে চান সেক্ষেত্রে আপনার এই বাইক অনেক কাজে দেবে। আপনার প্রতি মাসে যাতায়াতের যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। তার ৫ ভাগের ৪ ভাগই কমে যাবে এই স্কুটার ব্যবহারের ফলে।
এছাড়াও আপনি যদি বর্তমান সময়ে এসে একটি ইলেকট্রিক স্কুটার কেনেন তাহলে সেটা পরিবেশের জন্য অনেক ভালো হবে। কারণ বর্তমান পরিবেশে আমাদের জ্বালানি তেলের যোগান দেওয়া খুবই রিস্কি হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত দাম বেড়ে চলেছে জ্বালানি তেলের।
এই সকল বিষয় বুঝে সবার মাথায় একটি প্রশ্ন আসে। আমি যদি একটি ইলেকট্রিক বাইক কিনতে চাই, তাহলে কত টাকা ব্যয় হবে। আমি কি আমার সাধ্যের মধ্যে একটি ইলেকট্রিক বাইক কিনতে পারবো কিনা, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তা করে। আপনাদের এই চিন্তার অবসান ঘটানোর জন্য আমার আজকের এই পোস্ট। যাতে আপনারা জানতে পারেন কম দামে কোন জায়গা থেকে এবং কোন ইলেকট্রিক স্কুটার বাইকটি আপনি কিনতে পারবেন। তা জানতে নিচের লেখা পড়ুন:
বর্তমানে আমাদের দেশে অনেকগুলো কোম্পানি চলে এসেছে ইলেকট্রিক বাইক বাইকের বাজার কাঁপাতে। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবথেকে কম দামে এবং ভালো সার্ভিস দেবে এমন একটি ইলেকট্রিক বাইক হল Revoo A01. বর্তমানে আমাদের দেশে এর থেকেও অনেক কম দামে ইলেকট্রিক বাইক রয়েছে যার সার্ভিস এর থেকে আপনি সন্তুষ্ট নাও হতে পারেন।
যার কারণে আপনাকে সেই ধরনের বাইকগুলো সাজেস্ট করছি না। আপনি যে ইলেকট্রিক বাইকটি কিনলে কোন সমস্যা পোহাতে হবে না অনেকদিন চালাতে পারবেন এমন চিন্তা ভাবনা থেকেই আপনাকে এই বাইকটির সাজেস্ট করছি।
Revoo A01 ইলেকট্রিক বাইকটির বাংলাদেশে দাম কত?
Revoo কোম্পানির ইলেকট্রিক স্কুটি অথবা ইলেকট্রিক বাইকগুলো বর্তমানে বাংলাদেশের তিনটি মডেল এ পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে আজকে যে ইলেকট্রিক বাইকটি নিয়ে আলোচনা করেছি সেটি হল সবচেয়ে কম দামি। এই বাইকটি হলো Revoo A01. বাইকটির প্রথমে দাম ছিলো ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রায়। কিন্তু বর্তমানে দাম কমিয়ে এনেছে। তাই আপনি পেয়ে যাবেন ৯৪,৯০০ টাকায়।
ইলেকট্রিক বাইকটির ইঞ্চিন ও পারফরমেন্স
এই ইলেকট্রিক বাইকটি 45 km/h টপ স্পিড এবং 75 km রেঞ্জ সহ একটি মিড-রেঞ্জ ই-বাইক, যা মূলত শহুরে কমিউটার এবং স্বল্প দূরত্বের ভ্রমণে আগ্রহীদের জন্য উপযুক্ত।
বাইকটি কাদের জন্য ভালো?
- দৈনিক যাতায়াতকারী: ৪৫ কিমি/ঘণ্টা টপ স্পিড এবং ৭৫ কিমি রেঞ্জ শহর বা ছোট দূরত্বের দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য যথেষ্ট।
- শিক্ষার্থী বা অফিসগামী: আরামদায়ক রাইড এবং পর্যাপ্ত স্টোরেজ তাদের জন্য সুবিধাজনক।
- আরাম প্রিয় রাইডার: সামনের ও পেছনের হাইড্রোলিক সাসপেনশন এবং ড্যাম্পিং থাকার কারণে এটি একটি অত্যন্ত আরামদায়ক রাইডিং অভিজ্ঞতা দেবে।
- শহরের রাইডার: ১২০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং ডিস্ক/ড্রাম ব্রেক শহরের ট্রাফিকের জন্য উপযুক্ত।
- যাদের বড় স্টোরেজ প্রয়োজন: ২৪ লিটার সিট স্টোরেজ একটি হেলমেট বা বাজার/ব্যাগের জন্য যথেষ্ট জায়গা দেবে।
- নতুন চালক: খুব বেশি গতি না থাকায় নতুনদের জন্য এটি তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হতে পারে।
আপনি যদি দৈনিক যাতায়াতকারী কোন ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার নিজস্ব একটি যান প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে আপনার এই ধরনের একটি ইলেকট্রিক বাইক নেওয়া অনেক ভালো সিদ্ধান্ত হবে। কারণ Revoo A01 ইলেকট্রিক বাইকটি এই সুবিধাটি দেবে আপনাকে। এছাড়াও যারা প্রতিদিন স্কুল কলেজ কিংবা অফিসের যাত্রী তারা এই রিভো ইলেকট্রিক ই-বাইকটি নিয়ে চিন্তা করতে পারেন।
শহরের দৈনন্দিন যানযটের সমস্যায় এই ধরনের বাইক গুলো ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। আর এই Revoo A01 ইলেকট্রিক স্কুটার সেক্ষেত্রে মানুষের কাছ থেকে ভালো প্রশংসা পাচ্ছে।
আরো পড়ৃন: Triumph Thruxton Carrera: কার্বন ফাইবার চাকার সাথে যা দেখলেই মন ছুঁয়ে যাবে!
বাইকটির সুবিধাসমূহ:
- ইকো-ফ্রেন্ডলি: ইঞ্জিন নয়, মোটরচালিত — পরিবেশ দূষণ নেই।
- কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ: ইঞ্জিন-ওয়েল, ফুয়েল লাগছে না।
- শান্ত ও আরামদায়ক চালনা: কম শব্দ, হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্ভার।
- পর্যাপ্ত স্টোরেজ: ব্যাগ বা হেলমেট রাখার মতো জায়গা আছে।
বর্তমানে ব্যবহার করা উচিত কি?
হ্যাঁ, বর্তমান জ্বালানির উচ্চমূল্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের ইলেকট্রিক বাইক শহরাঞ্চলে অত্যন্ত উপযোগী। তবে দীর্ঘ দূরত্ব বা হাইওয়ে ব্যবহারের জন্য নয়।
Revoo কোম্পানি সম্পর্কে জানুন:
Revoo কোম্পানিট হলো একটি চায়না ব্রান্ড। রিভো কোম্পানিটি শুরু হয়েছে ২০২৩ সালে। যা খুব অল্প সময়ে অনেক সুনাম অর্জন করেছে। এই কোম্পানিটি তাদের পণ্য গুলো প্রথমে এফ্রিকা মহাদেশে লঞ্চ করেছে তাদের ই-বাইক গুলো। তারপর তারা এশিয়া মহাদেশে বাণিজ্য শুরু করেছে। প্রথমে পাকিস্তানে লঞ্চ করে। তার পর বাংলাদেশে এসেছ। ইতি মধ্যে বাংলাদেশে তাদের কোম্পানির ইলেকট্রিক বাইক গুলোর সম্পর্কে বাংলাদেশের সবার জানার আগ্রহ বেড়েছে।
Revoo কোম্পানির বাইক গুলো বাংলাদেশে যে পদ্ধতিতে আমদানি হয়ে থেকে তা হলো CBU. তবে আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে তারা অতি দ্রুত CKD পদ্ধিতিতে আনার চেষ্টা করবেন। যখন বাংলাদেশ রিবো কোম্পানির এই ইলেকট্রিক বাইকগুলো CBU পদ্ধতি বাদ দিয়ে CKD পদ্ধতিতে আমদানি করবে। সে ক্ষেত্রে আরো কম দামে গ্রাহকগণ এই বাইকগুলো হাতের নাগালে পাবে বলে আশা করা যায়।
রিভো কোম্পানি বর্তমানে তাদের কাস্টমার হিসেবে টার্গেট করছেন ইয়াং জেনারেশন। কারণ ইয়াং জেনারেশনই পরিবেশের সকল ভালো মন্দ চিন্তা করে থাকেন। তাই তাদের নিয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন করে কোম্পানির প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। যাতে সবাই এই বাইকের ভালো দিকটা বুঝতে পারেন।
রিভো কোম্পানি দাবি করছেন তাদের এই বাইকগুলো মাত্র নয় টাকার বিদ্যুৎ খরচ করলেই ৭৫ কিলো পর্যন্ত চলাচল করা যাবে।
পরিশেষে বলা যায়: ই বাইকটি একটি আরামদায়ক, ব্যবহারিক এবং পর্যাপ্ত স্টোরেজ-সহ একটি শহর-কেন্দ্রিক ইলেকট্রিক বাইক। যদি আপনার বাজেট সীমিত হয় এবং আপনি দৈনিক অল্প থেকে মাঝারি দূরত্বের যাতায়াতের জন্য একটি পরিবেশ-বান্ধব ও আরামদায়ক বাহন খুঁজছেন, তাহলে এটি একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।