
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ডাউনলোড সেরা ০৫ টি ওয়েবসাইট | Top 05 No Copyright Music Download Website.
বর্তমানে ডিজিটাল যুগে ইউটিউব ভিডিও, পডকাস্ট, ওয়েব সিরিজ বা যেকোনো ধরনের মাল্টিমিডিয়া বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কন্টেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে কপিরাইট ছাড়া মিউজিক বা রয়্যালটি ছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বা সাউন্ড ইফেক্ট খুঁজে পাওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভিডিও বা অডিও কনটেন্টের জন্য উপযুক্ত ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুঁজে পাওয়া এবং সেই মিউজিকের লিগ্যালিটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় কপিরাইট সমস্যার কারণে ভালো কন্টেন্ট তৈরি করা সত্ত্বেও তা ইন্টারনেটে প্রকাশ করা যায় না। এই সমস্যার সমাধানে রয়্যালটি-ফ্রি মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্টের ওয়েবসাইটগুলো বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এই নিবন্ধে, আমরা সেরা পাঁচটি রয়েলিটি ফ্রি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেমন: Audio Library, Pixabay, Incompetech, Free Sound এবং Nocopyrightsound—সম্পর্কে আলোচনা করব এবং কীভাবে এগুলি আপনাকে আপনার কন্টেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে সেগুলো আলোচনা করব।
১। অডিও লাইব্রেরি (YouTube Audio Library)

অডিও লাইব্রেরি হলো ইউটিউবের একটি ডেডিকেটেড ফিচার, যা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য ১০০% কপিরাইট ফ্রি মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্ট প্রদান করে। যারা ইউটিউব বা অন্যান্য প্লাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করেন তাদের জন্য অসাধারণ একটি সাপোর্ট সিস্টেম এই অডিও লাইব্রেরি। অডিও লাইব্রেরির বিশেষ্যত্ব হলো এটি সকল ইউজারদের জন্য সহজে অ্যাক্সেসযোগ্য।
অডিও লাইব্রেরির সুবিধাসমূহ:
- কপিরাইট ফ্রি মিউজিক: ইউটিউব অডিও লাইব্রেরি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের একটি অংশ, তাই এখানে দেওয়া সকল ট্র্যাক ১০০% কপিরাইট ফ্রি।
- মনিটাজেশন: এখানের সকল গানগুলো কপিরাইট এবং রয়েলিটি ফ্রি হওয়ায় মনিটাইজেশনের জন্য কোন সমস্যা হয় না।
- ক্যাটাগরি: ফিল্টার করে বিভিন্ন জনরার গান সহজেই খুজে বের করা যায়।
- সাউন্ড ইফেক্ট: ব্যাগরাইন্ড মিউজিকের পাশাপাশি এখানে রয়েয়ে সাউন্ড ইফেক্ট এর এক সমাহার।
- বিনামূল্যে অ্যাক্সেস: ব্যবহারকারীদের মিউজিক ডাউনলোড করার জন্য কোন ফি বা সাবস্ক্রিপশন দেওয়া লাগে না।
- নিয়মিত আপডেট: কতৃপক্ষ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মিউজিক আপলোড করা হয়।
- ব্যবহার: সব গান YouTube ভিডিওতে ব্যবহার করা যায়।
ব্যবহারকারীদের জন্য টিপস:
(YouTube Audio Library) অডিও লাইব্রেরির থেকে ব্যাগরাউন্ড মিউজিক বা সাউন্ড ইফেক্ট ডাউনলোড করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে দেখে নেবেন। কারণ কিছু কিছু মিউজিকের ক্রেডিট দেওয়া লাগতে পারে। তাই আপনি প্রতিটি মিউজিক ডাউনলোড করার পূর্বে লাসেন্স ফিল্ড খেয়াল করবেন সেখানে কি ক্রিয়েটর কমন বা (cc) লেখা আছে কি না। যদি না থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
২. পিক্সাবে (Pixabay Music)

Pixabay শুধু ছবি, ভিডিও নয়, রয়্যালটি-ফ্রি অথবা কপিরাইট ফ্রি মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্টের জন্যও একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। পিক্সাবের মিউজিক লাইব্রেরি এখন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য একটি চমৎকার ফ্রি মিউজিক এর উৎস হয়ে উঠেছে। সহজে পছন্দ মত মিউজিক ট্রাক পেতে হলে আনাকে পিক্সাবে ব্যবহার করতে হবে।
পিক্সাবের মিউজিক লাইব্রেরির সুবিধাসমূহ:
- সাবস্কীপশন ফ্রি: এই সাইট থেকে কোন মিউজিক বা সাউন্ড ইফেক্ট ডাউনলোড করতে হলে কোন কোন ধরনের কোন সাবস্ক্রীপশন কেনার প্রয়োজন নেই। অম্পূর্ণ ফ্রিতে হাই কোয়ালিটির অডিও ট্রাক পাওয়া যায়।
- ব্যবহার: এখানের সকল মিউজিক আপনি আপনার ইউটিউট ভিডিওতে বা অন্যান্য যে কোন প্লাটফর্মে ব্যবহার করতে পারবেন কোন ধরনের কোন অনুমতি লাগবে না।
- মনিটাইজেশন: কপিরাইট ফ্রি মিউজিক তাই পিক্সাবের মিউজিক গুলো রয়েলিটি ফ্রি তাই আপনি কোন ঝামেলা ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন।
- ইউজার ফ্রেন্ডলি: পিক্সাবের ইন্টারফেস সহজ তাই আপনি দ্রুত আপনার পছন্দ মতো মিউজিক খুজে ডাউনলোড করতে পারবেন।
- ক্রেডিট: ব্যবহারের সময় Pixabay-কে ক্রেডিট দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
ব্যবহারকারীদের জন্য টিপস
আপনার প্রজেক্টের ধরন অনুসারে পিক্সাবের ফিন্টার অপশন ব্যবহার করে আপনি আপনার কাঙ্কিত গান খুজে পাবেন।
৩. ইনকম্পিটেক (Incompetech)

Incompetech Kevin MacLeod-এর তৈরি একটি ওয়েবসাইট। এটি মুলত কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের রয়্যালটি- আর কপিরাইট ফ্রি মিউজিক উপহার দিয়ে আসছে। কেভিন ম্যাকলিওড ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়, কারণ তার সৃষ্ট মিউজিকগুলো খুবই মানসম্মত এবং সবাই ব্যবহার করে থাকেন।
ইনকম্পিটেকের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- কপিরাইট ফ্রি: ইনকম্পিটেকের মিউজিক বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এবং তারা রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক প্রদান করে। তবে কিছু কিছু মিউজিক আছে যেগুলোতে ক্রেডিট দেওয়া লাগে।
- সংগ্রহ: ২০০০+ হাই কোয়ালিটি ইন্সট্রুমেন্টাল ট্র্যাক রয়েছে যা ইউটিউব ভিডিও, সিনেমা, গেমিং এবং নাটকে ব্যবহার করার যোগ্য।
- ফরমেট: ওয়েবসাইটটির মিউজিকগুলো MP3 ও OGG ভার্সন ডাউনলোড করা যায়।
ব্যবহারকারীদের জন্য টিপস:
ইনকম্পিটেক ব্যবহারকারীদের অবশ্যই প্রতিটি মিউজিক ডাউনলোড করার আগে দেখে নিতে হবে কারণ অনেক মিউজিকে ক্রেডিট দেওয়া লাগে।
৪. ফ্রি সাউন্ড (FreeSound)

ফ্রি সাউন্ড একটি খুবই জনপ্রিয় কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বা রয়্যালটি ফ্রি ওয়েবসাইট। যেখানে লাখ লাখ সাউন্ড এফেক্টস এবং রয়্যালটি-ফ্রি মিউজিক প্রদান করে থাকে। এখানের মিউজিক গুলো ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের আওয়াতায় পরে। ফ্রিসাউন্ড বিশেষ করে সাউন্ড ডিজাইনা এবং ভিডিও ক্রিয়েটরদের বিশেষ সহায়ক একটি প্লাটফর্ম।
ফ্রি সাউন্ডের বৈশিষ্ট্য:
- সংগ্রহ: ওয়েবসাইটে লাখ লাখ কপিরাইট ফ্রি মিউজিক সাউন্ট ইফেক্টের সংগ্রহ রয়েছে। ক্লাসিক এবং মর্ডান সব ধরনের।
- প্রয়োজনীতা: এখানের সাউন্ড ইফেক্ট গুলো ভিডিও, গেমিং, এবং অডিও প্রোজেক্টের জন্য উপযুক্ত। যে সকল ইউজারগণ এই ধরনের কাজ করে থাকে তাদের জন্য হতে পারে সাউন্ড ইফেক্টের ভান্ডার।
- লাইসেন্সিং: এখানের সাউন্ড গুলোর জন্য বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স রয়েছে। সব মিউজিক গুলো ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের
- ডাউনলোড: ইউজাররা মিউজিক ডানলোডের পাশাপাশি আপলোড করার সুযোগ রয়েছে।
ব্যবহারকারীদের জন্য টিপস:
ফ্রি সাউন্ড ওয়েবসাইটটির অনেক মিউজিক ক্রিয়েটিভ কমন্স এর আওতায় রয়েছে। আবার অনেক মিউজিক রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে ক্রেডিট দেওয়া লাগবে। তাই আপনি ফ্রি সাউন্ড এর মিউজিকগুলো ব্যবহারের পূর্বে লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়টি ভালো ভাবে পড়ে নিবেন।
৫. নো কপিরাইট সাউন্ডস (NoCopyrightSounds – NCS)

NoCopyrightSounds – NCS হলো একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল। যারা একটি রেকর্ড পরিমান রয়্যালিটি ফ্রি বা কপিরাইট ফ্রি মিউজিক প্রদান করে থাকে। তাদের ইউটিউব চ্যানেলের থেকে বা তাদের ওয়েবসাইট থেকে মিউজিক ট্রাক গুলো ডাউনলোড করা যায়।
NCS-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- ইলেকট্রনিক মিউজিক: যারা ইলেকট্রনিক মিউজিক খুজছেন তাদের জন্য হতে পারে বিখ্যাত একটি সোর্স। কারণ তারাই ইলেকট্রনিক ড্যান্স মিউজিক (EDM) বা ড্রাম এবং বেস মিউজিক এর জন্য বিখ্যাত।
- আপডেট: তারা প্রতি নিয়ত নতুন নতুন মিউজিক আপলোড করে থাকে।
- বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য: তাদের গান গুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। কোন ধরনের কোন সাবস্ক্রীপশন কেনার প্রয়োজন।
- ব্যবহার: তাদের মিউজিক গুলো ইউটিউব ছাড়াও অন্যান্য প্লাটফর্মেও ব্যবহার করা যায়।
ব্যবহারকারীদের জন্য টিপস:
NCS-এর মিউজিক ব্যবহার করার সময় সব সময় ভিডিওর ডিসক্রিপশনে কৃতজ্ঞতা বা ক্রেডিট দেওয়ার শর্ত পালন করতে হবে।
১. প্রতিটি গান বা সাউন্ড ইফেক্টের লাইসেন্স শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ুন।
২. যেখানে প্রযোজ্য, সেখানে অবশ্যই ক্রেডিট দিন।
৩. কমার্শিয়াল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৪. সময়ে সময়ে লাইসেন্স শর্তাবলী পরিবর্তন হতে পারে, তাই নিয়মিত আপডেট থাকুন
আরো পড়ুনঃ
আপনি কি জানেন টিকটক, শর্টস এবং রিলস ভিডিও দেখার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে
Follow me
বিশ্বেসেরা রয়্যালিটি ফ্রি প্রিমিয়াম কিছু ওয়েবসাইট।
- Epidemic Sound
- AudioJungle
- Artlist
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কি ফ্রি? / কপিরাইট ফ্রি আসলে কি?
কপিরাইট ফ্রি শব্দটি নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বলতে সম্পূর্ণ ফ্রি না। বিভিন্ন প্লাটফর্মের আইন অনুযায়ী এর সঙ্গা পরিবর্তন হয়ে থাকে। কোন মিউজিক বিনামুল্যে ব্যবহার করা যায়। আমার কোন কোন জায়গা থেকে একবার পেমেন্ট করে সেই মিউজিক বার বার ব্যবহার করা যায়। আবার কোথাও শুধু মাত্র মিউজিক শিল্পীদের ক্রেডিট দিয়েই তা ব্যবহার করা যায়। তাই বলা যেতে পারে কপিরাইট ফ্রি বলতে যে অসম্পূর্ণ ফ্রি বলা যাবে না।
যে ক্ষেত্রে কোন মিউজিক বা অন্য কোন কিছুও হতে পারে তা যদি কপিরাইট আইনের আওতায় না থাকে সেই মিউজিক কোন বাধা ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবে যে কোন ইউজার। আবার কোন শর্ত সাপেক্ষে ইউজারদের ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে সেই শর্ত মেনে ইউজারগণ তা ব্যবহার করলে কোন সমস্যা নেই।
রয়্যালটি-ফ্রি মিউজিক কি?
রয়্যালিটি ফ্রি মিউজিক বলতে একবার পেমেন্ট করার পরে তা বার বার ব্যবহার করা যায়। তবে তা যদি বিজনেস করা হয় তবে সেক্ষেত্রে নিয়ম নীতি আলাদা হতে পারে।
Creative Commons লাইসেন্স কি?
Creative Commons লাইসেন্স বলতে যেখানের কপিরাইট ফ্রি মিউজিকগুলো ব্যবহার করতে গেলে তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় বা শুধু কৃতজ্ঞতা জানিয়েই পারা যায়। আর বাড়তি কোন ফি দেওয়া লাগেনা তাকে বলে। অধীনে পাওয়া যায়, যা বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে মিউজিক কতৃপক্ষের/ শিল্পীর ক্রেডিট বা কৃতজ্ঞতা দেওয়ার শর্ত থাকতে পারে।
ইউটিউব অডিও লাইব্রেরির কি সব মিউজিক কপিরাইট ফ্রি?
এখানের সব মিউজিক কপিরাইট ফ্রি মিউজিক নয়। প্রায় সব মিউজিক ট্রাক গুলো ফ্রিতে ব্যবহার করা যায় কোন টাকা বা ক্রেডিট দেওয়া লাগে না। তার মধ্যে কিছু কিছু মিউজিক ট্রাক রয়েছে যে গুলো ব্যবহার করলে কৃতজ্ঞতা/ক্রেডিট দেওয়া লাগে।
স্পটিফাই মিউজিক কি রয়্যালটি ফ্রি?
না, Spotify রয়্যালটি-মুক্ত সঙ্গীত নয় । এই ওয়েবসাইট তাদের কোন গানের অধিকার রাখে না। কিন্তু তাদের থেকে প্রতিবার স্ট্রিম করার সময় এটি শিল্পীদের তাদের গানের জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করা লাগে। যেহেতু তাদের রয়্যালটি ফি দিতে হয় তাই বলা যায় স্পটিফাই রয়্যালটি ফ্রি না।
ফ্রি ও রয়্যালটি ফ্রি এর মধ্যে পার্থক্য কি?
ক্র: নং | ফ্রি | রয়্যালটি ফ্রি |
০১ | এটি সম্পূর্ন বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। | এটি ১বার নির্দিষ্ট পরিমান ফি দিয়ে বার বার ব্যবহার করতে পারে। |
০২ | ব্যক্তি গত ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করা যায়। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে পারে না। | এখানের মিউজিক গুলো ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক সব যায়গায় ব্যবহার করা যায়। |
০৩ | প্রায়শই শিল্পীকে ক্রেডিট দিতে হয় | কখনো কখনো প্রয়োজন হয়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেওয়া লাগে না। |