
ভাতার টাকা কবে দিবে? বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীসহ যেকোন ভাতা থাকলে সর্তক থাকুন
বাংলাদেশে ১৯৯৭ সাল থেকে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, হিজড়াদের ভাতা সহ সরকারি বেসরকারি খ্যাতেও বিভিন্ন ভাতা সরকার থেকে অনুদান করে থাকেন। আর এই টাকাগুলো নিয়েই এই ধরনের অসহায় মানুষেরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। হয়তো কয়েক বছর আগেও এই ভাতের টাকাগুলো প্রত্যেকটা মানুষের হাতে হাতে দেওয়া হত। কিন্তু তখন যে টাকা সরকার থেকে অর্থ প্রদান করা হতো সেই টাকা সে ভুক্তভোগে সম্পূর্ণ পেত না।
বর্তমান ডিজিটাল হওয়ার কারণে প্রত্যেকটা মানুষের কাছেই সরকার থেকে পাঠানো কারো মাধ্যমে না গিয়ে সরাসরি তার একাউন্টে ভাতের টাকা পাঠিয়ে দেয়। বাংলাদেশের বর্তমানে সরকারি ভাতার টাকা প্রদান করে থাকেন নগদ একাউন্টের মাধ্যমে। যেহেতু নগদে খরচ কম এবং সহজলভ্য রয়েছে তাছাড়া নগদ সরকারের সাথে কানেক্টেড যার কারণে নগদের মাধ্যমেই সকল সরকারি ভাতা প্রদান করে থাকেন।
কবে ভাতার টাকা দিবে 2025
ইতিমধ্য ২০২৫ সালে প্রথম ধাপে সকল ভাতার টাকা প্রদান করা হয়েছে। এখন প্রায় ছয় মাস হতে যাচ্ছে। এই কারণে আবারো টাকা পাওয়ার সময় আসছে। তাই প্রত্যেকটা মানুষই জানতে চান যে কবে ভাতা টাকা দেবে। সরকারের একটি নোটিশ থেকে ধারণা করা হচ্ছে ঈদের আগেই প্রত্যেকটা মানুষের প্রতিটা ক্যাটাগরির ভাতার টাকা তার নিজস্ব একাউন্টে চলে যাবে। তাই আপনারা যারা ভাটার টাকা পেয়ে থাকেন তারা নিশ্চিত থাকুন যে আপনাদের ভাতা টাকা ঈদের আগেই দেওয়া হবে।
যেহেতু সরকার একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর এই অর্থ প্রদান করে থাকেন সেহেতু তারা নির্ধারণ করেছে ঈদের আগেই প্রত্যেকের ভাতার টাকা প্রদান করবেন। এতে ভুক্তভোগীরা ঈদের জন্য এই টাকা দিয়ে যেকোনো কিছু একটা করতে পারবেন। তবে বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ মানুষকে এই ভাতা প্রদান করে থাকেন।
সেহেতু অনেকের টাকা আগে পৌঁছায় আবার অনেকের টাকা একাউন্টে যেতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। এতে এক থেকে পনের দিনের মতো সময় লেগে যায় প্রত্যেকটা মানুষের নগদ একাউন্টে টাকা দিতে। তাই হয়তো আপনার বাড়ির পাশে একজন পেয়েছে সেটা দেখে অনেকেই হতাশ হয়ে থাকেন যে কখন তার টাকাটা দেবে।
ভাতার টাকা প্রদান করলে কিভাবে বুঝবেন?
দেখুন বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ মানুষকে ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। এই কারণে কারো টাকা আগে আসে এবং কারো টাকা পরে আসে। সেই কারণে আমরা এলাকার যদি কারো অ্যাকাউন্টে ভাতের টাকা ঢুকে তাহলে বুঝবেন আপনিও খুব শীঘ্রই টাকা পেতে যাচ্ছেন। তাছাড়া যখন ভাতের টাকা প্রদান করা হয়ে থাকে তখন বিভিন্ন অজানা ফোন থেকে কল আসে। সেখানে বলা হয়ে থাকে বিভিন্ন উপায় আপনার কাছ থেকে কোড নেওয়ার।
হ্যাকারের হাত থেকে বাঁচার উপায়
দেখুন যে সকল ব্যক্তিরা ভাতা টাকা পেয়ে থাকেন তারা আসলে অনেকটা ভুক্তভোগী। তারা এই সামান্য টাকা দিয়েই কিন্তু তাদের সংসারটা চলে থাকে অনেকের। অনেকেই এই টাকার আশায় বসে থাকেন ওষুধ কেনার জন্য। আবার অনেকেই এই টাকা নিয়ে অনেকটা স্বপ্ন দেখেন। তাই এই টাকাটা যে সকল ভুক্তভোগীরা ভাতা পেয়ে থাকেন তাদের কাছে অনেকটা মূল্যবান।
তবে আমাদের সমাজে এমন কিছু নিকৃষ্ট মানুষ রয়েছে যারা এই টাকার লোভ ছাড়া না। তারা বিভিন্ন উপায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করে যে নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে থাকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে। সেই নাম্বারে হ্যাকারের দলরা ফোন করে বিভিন্ন ধরনের ব্ল্যাকমেল এর মাধ্যমে ওটিপি কোড নিয়ে থাকেন। আর এই কোডটা নিয়ে যদি নিতে পারে সে তাহলে সমস্ত এক্সেস তার কাছে থাকে। যদি সেই একাউন্টে ভাতা টাকা ঢুকে তাহলে সে সাথে সাথে অন্য একটা একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পারে। এই কারণে আপনাকে অথবা আপনার যদি আশেপাশের কেউ ভাতার টাকা পেয়ে থাকেন তাদেরকে অবশ্যই সতর্কতা করবেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে কখনই আপনাকে কল দেবে না। যদি আপনার কোন রকম কোন সমস্যা হয়ে থাকে বা তাদের ওখানে কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সরাসরি আপনার সাথে যোগাযোগ করবেন অথবা আপনি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে সকল অফিস রয়েছে সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করতে হয়।
এই কারণে যদি কোন অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে তাহলে সেই কলটি ধরবেন না। দেখুন হ্যাকার একটু চালাক ধরনের হয়ে থাকে তাই তারা বাংলাদেশের সরাসরি নাম্বার দিয়ে ফোন না করে তারা বাংলাদেশের কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে নতুন একটি অন্য নাম্বার দিয়ে ফোন করে থাকেন। তবে ওই নাম্বারটি দেখলে বোঝা যায় যে এই নাম্বারটি হয়তো অফিস থেকে ফোন করেছে।
কিন্তু আসলে এটি অফিসের কোন নাম্বার না অথবা কোন টেলিফোনের নাম্বার না। এটি একটি পাবলিকই নাম্বার যেটা আপনি আমি সবই ব্যবহার করতে পারব। তবে এই নাম্বারগুলো দিয়ে যদি ফোন করে তাহলে তাকে ধরা একটু কষ্টকর হয়ে থাকে। ধরা যাবে না এই নয় তাকে ধরা যাবে তবে যে নাম্বার দিয়ে ফোন দিবে সেই নাম্বারে থানায় গিয়ে মামলা করতে হবে। তাহলে ওই নাম্বারটা কোন নাম্বার দিয়ে খোলা হয়েছে তা জানতে পারবেন এবং তার পরিচয় পেয়ে যাবেন।
তবে আমাদের সমাজের দুঃখের বিষয় হলো যে সকল ব্যক্তিরা এই ভাতা টাকা পেয়ে থাকেন তারা খুবই দরিদ্র হয়ে থাকেন। যার কারণে তাদের এই টাকাটা যদি চলে যায় তারা কষ্ট পেলেও তারা এই সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন না। অথবা তারা যদি থানায় গিয়ে বলে তাহলে হয়তো কিছু একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে তবে তারা এই কাজটা কেউ করতে চায় না। যার কারণে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে তেমন একটা শোনা যায়নি যে কোন একটা হ্যাকার বা প্রতারককে ধরা হয়েছে।
এই কারণে প্রত্যেকটা জনগণকেই সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে। যে সকল মানুষেরা এই ভাতার টাকা পেয়ে থাকেন তারা অনেকেই এই সকল কিছু বোঝেনা। যার কারণে তাদের কাছে ওই সকল নিকৃষ্ট মানুষেরা ফোন করে তাদেরকে বিভিন্নভাবে আবোল তাবোল বোঝায়। আর যে ব্যক্তি ভাতার টাকা পেয়ে থাকেন সে যদি না বোঝেন তাহলে তার ফাঁদে সে পড়ে যায়।
এই কারণে আমি আপনাকেই বলছি যেহেতু আপনি আমার এই পড়াটি পড়েছেন তার মানে আপনি একজন জ্ঞানী ব্যক্তি। তাই আপনার আশেপাশে অথবা আপনার গ্রাম বা অঞ্চল বা শহরের যদি কোন মানুষ এই ভাতার টাকা পেয়ে থাকেন তাদেরকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে বলবেন। তাদেরকে জানাবেন যে কেউ কোন অজানা নাম্বার থেকে ফোন আসলে সেটি ধরবে না অথবা যদি ধরে তাহলে সমাজকল্যাণ অথবা এই ভাতা সম্পর্কে কোনো রকম কথা বললে সাথে সাথে সেই ফোনটি কেটে দিতে বলবেন।
যে ব্যক্তি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন সে এটুকু হলেও বোঝেন যে কিভাবে ফোনটি কাটতে হয়।
তাই ভাতা টাকা কবে দিবে বা আপনার এলাকায় যদি কেউ টাকা না পেয়ে থাকে তবে যদি কোন রকম এই ধরনের নিকৃষ্ট হ্যাকারদের ফোন আসে তাহলে ভাববেন ভাতার টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আর যারা ভাতার টাকার আশায় ছিলেন তাদের অবসান ঘটবে।
যদি নগদ একাউন্টের পিন অথবা ওটিপি কোড দিয়ে দেন তাহলে কি করবেন?
যদি আপনার পরিবার অথবা আশেপাশে কোন পরিবারের সদস্য যারা ভাতার টাকা পেয়ে থাকেন তাদের সাথে যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে। যে তাকে কোন ভাবে ঘায়েল করে তার কাছ থেকে নগদ একাউন্টের পিন নাম্বার অথবা ওটিপি কোড নিয়ে গেছে। তাহলে এমত অবস্থায় আপনারা কি করবেন?
- ১. যদি আপনার সেই নগদ একাউন্টটি বাটন মোবাইল ফোনে সিমটি ভরা থাকে। তাহলে আপনি যত দ্রুত সম্ভব একটি স্মার্ট ফোনে আপনার সেই নগদ একাউন্টটি লগইন করবেন সেই মোবাইলের সিমটি ঢুকিয়ে।
- ২. অথবা আপনার পিন নাম্বার যদি তারা জেনে যায় অথবা ওটিপি কোড তারা নিয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পিন নাম্বার পরিবর্তন করে ফেলবেন। যদি আপনার পুরানো পিনের কাজ না হয় তাহলে সরাসরি নগদের কাস্টম কেয়ারে ফোন করবেন। তাদের কাছে বিষয়টি খুলে বলবেন তাহলে তারা খুব দ্রুত আপনার সমস্যাটি সমাধান করে দিবে।
তো বন্ধুরা সর্বশেষে এটুকু বলবো যে আপনি নিজের সতর্ক থাকুন আর আশেপাশের মানুষদেরও সতর্ক থাকতে উৎসাহিত করুন। এই হ্যাকারের পাল্লায় শুধুমাত্র যে যারা ভাতা টাকা পেয়ে থাকেন তারা পরে এটা নয় এই হ্যাকারের পাল্লায় আপনিও পড়তে পারেন সেই কারণে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।