
জিপিএস ট্র্যাকার কেনার আগে জেনে নিন
জিপিএস ট্র্যাকার কেনার আগে অবশ্যই জেনে নিন জিপিএস – Gps tracker কি? জিপিএস ট্র্যাকার হলো একটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস যার মাধ্যমে গ্লোবাল পজিশনিং নির্ধারন করা যায় এবং সেই তথ্য প্রেরণ করতে পারে। এটি সাধারণত ব্যক্তি, যানবাহন বা মূল্যবান জিনিসপত্র ট্র্যাক করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
জিপিএস ট্র্যাকার কেনার আগে আপনার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন:
প্রথমে আপনি নির্ধারণ করুণ কি কারণে জিপিএস ট্র্যাকার – Gps tracker টি ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। একটি জিপিএস ট্র্যাকার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন: যানবাহন ট্র্যাকিং, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পশু ট্র্যাকিং, সম্পদ ট্র্যাকিং, অ্যান্টি-থেফট (Anti-theft)
জিপিএস ট্র্যাকার – Gps Tracker কত প্রকার ও কি কি?
জিপিএস ট্র্যাকার বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। জিপিএস (GPS) ট্র্যাকার সাধারণত তাদের ব্যবহার ও প্রযুক্তির ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত করা যায়। তারপরেও নির্ধারন করে বলতে গেলে বলতে হবে জিপিএস ট্র্যাকার প্রধানত তিন প্রকার।
১. ব্যক্তিগত জিপিএস ট্র্যাকার (Personal GPS Trackers):
ব্যবহার: ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও পর্যবেক্ষণের জন্য এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করা হয়। আপনি যদি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনি এই জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করবেন। সাধারণত ব্যক্তিগত জিপিএস ট্র্যাকার গুলো যে সকল কাজে বেশি ব্যবহৃত হয় তা হলো: শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, পর্বতারোহী, ভ্রমণকারীদের পর্যাবেক্ষণ করার জন্য পার্সোনাল জিপিএস ট্র্যাকার ব্যবহার করা হয়।
বৈশিষ্ট্য: ব্যক্তিগত জিপিএস ট্র্যাকার এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো হলো আকারে ছোট এবং বহনযোগ্য। এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার শিশুদের স্কুল ব্যাগে রাখা যায়। পর্বতারোহী এবং ভ্রমনকারীদের পর্যাবেক্ষণ করার জন্য তাদের পকেট বা ব্যাগের মধ্যে সহজেই রাখা যায়।
তাছাড়া এই জিপিএস ট্র্যাকার গুলোতে একবার চার্জ দিলে দির্ঘসময় চার্জ থাকে। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এগুলোতে এসওএস SOS বাটন দেওয়া থাকে। যা জরুরি অবস্থায় সহায়ক হতে পারে। জরুরি প্রয়োজনে এই বাটন চাপলে কতৃপক্ষের কাছে এমার্জেন্সি নোটিফিকেশন যাবে। যার মাধ্যমে আপনি যদি কোন বিপদে পড়েন তার থেকে সহজেই উদ্ধার হতে পারবেন।
২. ভেহিকল জিপিএস ট্র্যাকার (Vehicle GPS Trackers):
ব্যবহার: এই ধরণের জিপিএস ট্র্যাকার গুলো গাড়ি, মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাক, ইত্যাদি যানবাহনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগত উভয় প্রকার যানবাহনের জন্য এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার খুবই দরকারি।
বৈশিষ্ট্য: গাড়ির পাওয়ার সাপ্লাইয়ে সাথে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়ে থাকে। তাই এই ট্র্যাকার গুলোতে আলাদা করে চার্জ দেওয়া লাগে না। আবার কিছু ওয়্যারলেস বা ব্যাটারি চালিত মডেলও পাওয়া যায়। লাইভ ট্র্যাকিং, গতির তথ্য, রুট হিস্ট্রি, ইঞ্জিন স্ট্যাটাস ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা যায় এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার দিয়ে।
৩. অ্যাসেট জিপিএস ট্র্যাকার (Asset GPS Tracker)
ব্যবহার: মুল্যবান সম্পত্তির পর্যবেক্ষণ করতে চাইলে এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার গুলো ব্যবহার করবেন। মুল্যবান সম্পত্তির মধ্যে যেমন: কন্টেইনার, মালবাহী ট্রাক, বা ব্যাগেজ ট্র্যাকিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
বৈশিষ্ট্য: দির্ঘমেয়াদী চার্জ থাকে এবং পোর্টেবল হয়ে থাকে এই জিপিএস ট্র্যাকার গুলো। এই ট্র্যাকার গুলো বিরুপ পরিবেশে ও ট্র্যাকিং তথ্য দিতে পারে। সহজে নষ্ট হয় না, তাই চুরি হওয়ার থেকে রক্ষা করে থাকে।
এছাড়াও অন্যান্য জিপিএস ট্র্যাকার গুলো হলো:
৪. পেট জিপিএস ট্র্যাকার (Pet GPS Trackers):
গরু, কুকুর, বিড়াল এর গলার বেল্টের সাথে এই ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার দেওয়া হয়। যাতে সহজে পোষা প্রাণিদের খুজে পাওয়া যায়।
৫. হিডেন জিপিএস ট্র্যাকার (Hidden GPS Trackers):
কোন বস্তু বা ব্যক্তির উপর গোপনে নরজদারি করার জন্য এই ধরনের হিডেন ট্র্যাকার গুলো ব্যবহার করা হয়। এগুলো সাধারণত শক্তিশালী চুম্বক বা আঠালো টেপ দিয়ে সহজে যেকোনো জায়গায় লুকানো যায়।
৬. ব্লুটুথ জিপিএস ট্র্যাকার (Bluetooth GPS Trackers):
এই ট্র্যাকার গুলো মুলত কাছাকাছি কার্যকরী হয়ে থাকে যেমন – চাবি, ওয়ালেট, ব্যাগ ইত্যাদি খুঁজে বের করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুন: কমরেটে কথা বলার জন্য সেরা সিম সম্পর্কে জানুন
জিপিএস ট্র্যাকার (GPS Tracker) কেনার আগে যে বৈশিষ্ট্য গুলো দেখে কিনবেন
- রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং: প্রথমে যে ফিচারটি দেখতে হবে তা হলো রিয়েল টাইম মনিটরিং
- জিও-ফেন্সিং: জিওফেন্সি হলো একটি নিদির্ষ্ট এলাকা যেখানে গেলে সাথে সাথে নোটিফিকেশন দিয়ে জানিয়ে দেবে। অথবা একটি নির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণ করে দিলে সেই সীমানা অতিক্রম করলে নোটিফিকেশন দিয়ে জানাবে।
- ডেটা সংরক্ষণ: যে জিপিএস ট্র্যাকারটি কিনছেন দেখবেন সেটিতে ডেটা সংরক্ষণ করার অপশন আছে কি না। আপনার যদি রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং প্রয়োজন হয় তাহলে এই অপশন না থাকলেও সমস্যা নেই। অন্যান্য ক্ষেত্রে এই ফিচারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। যার মাধ্যমে আপনি পূর্বের সকল তথ্য বের করতে পারবেন। গাড়ির ক্ষেত্রে আপনি কোন কোন লোকেশনে গিয়েছেন, কত গতিতে গাড়িটি চালিয়েছেন তার সবই সেভ করা থাকে। তাই এই ফিচারটি দেখে নিবেন।
- গতি পর্যবেক্ষণ: গতি পর্যবেক্ষণ করার এই ফিচারটি থাকলে আপনার গাড়িটিতে একটি নির্দিষ্ট গতি সেট করে রাখতে পারবেন। যখন এই গতি অতিক্রম করবে তখন এলার্ম বা নোটিফিকেশন অথবা কলিং এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবে আপনার সেট করা গতি অতিক্রম করেছে। তাই এই ফিচারটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
- SOS বাটন: আপনি যখন কোন বিপদে পড়বেন বা অন্য কোন জরুরি মুহুর্তে আপনি এই বাটনটি চাপলে তাৎক্ষণিক ভাবে জরুরি নোটিফিকেশন যাবে মালিকের কাছে।
- ফুয়েল মনিটরিং: ফুয়েল মনিটরিং করার জন্য এই ফিচারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। এর মাধ্যমে আপনি ফুয়েলের ব্যবহার পর্যবেক্ষন করতে পারবেন।
- ব্যাটারি ও পাওয়ার অ্যালার্ট: ব্যাটারিতে চার্জ লেবেল কমে আসলে কিংবা পাওয়ার ক্যাবল কোন কারণে বিচ্ছিন্ন হলে নোটিফিকেশন চলে আসবে সাথে সাথে।
- মোবাইল ও ওয়েব সাপোর্ট: আপনার যে জিপিএস ট্র্যাকার রয়েছে তা কি মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্র্যাকিং করা যায় তা দেখে নিবেন।
সাবস্ক্রিপশন ফি (Subscription Fees)
জিপিএস ট্র্যাকার গুলো প্রধানত দুই ধরনের সাবস্ক্রিপশন এর মাধ্যমে হয়ে থাকে যথা:
- এক কালিন সাবস্ক্রিপশন ফ্রি
- মাসিক বা বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন
জিপিএস ট্র্যাকার কোথা থেকে কিনবেন?
আপনি অনলাইন থেকে কিনতে পারেন আবার যেকোন ইলেক্ট্রনিক দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন। কেনার পরে আপনি একটি গ্যারেজে গিয়ে আপনার গাড়িতে সেট করে নিবেন। আর যদি পোর্টেবল জিপিএস ট্র্যাকার গুলো কেনেন তাহলে আর সেট করার কোন ঝামেলা থাকবে না। সেটি তো শুধু সঙ্গে রাখলেই ট্র্যাক করা যাবে। Follow