সেরা ৮টি টাকা খাটানোর উপায় যা আপনাকে দ্রুত ধনী বানাবে

Share This Post
টাকা খাটানোর উপায়

সব মানুষই ধনী হতে চায়। টাকা খাটানোর উপায় জানলে দ্রুত ধনী হওয়া যায়। কিন্তু সবাই এটা জানে না। আজকে আমি আপনাকে সেরা ৮টি টাকা খাটানোর উপায় সম্পর্কে জানাবো যার মাধ্যমে আপনি টাকা দিয়ে টাকা বানাতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নিই নেই ৮টি উপায়। 

আপনার যদি টাকা থেকে থাকে তাহলেই আপনি এই কাজ গুলো করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি এই উপায় গুলোর সাহায্যে ভালো কোন ফলাফল পাবেন না। 

টাকা খাটানোর উপায় গুলোর ঝুকি আছে কি না?

টাকা খাটানোর উপায় গুলোর মধ্যে যে উপায় গুলো শেয়ার করবো তার মধ্যে কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে আপনি কম ঝুকিতে টাকা দিয়ে টাকা বানাতে পারবেন। আবার কিছু উপায় আছে যার ঝুকি বেশি আাবার টাকা আয়ের সম্ভাবনা ও থাকে বেশি। 

সেরা ৮টি টাকা খাটানোর উপায়

  1. বন্ড বা ফিক্সডিপোজিট
  2. সোনা বা স্বর্নতে ইনভেস্ট করা
  3. রিয়েল স্টেট 
  4. স্টক মার্কেট
  5. মিউচুয়াল ফান্ড
  6. স্টার্টাপ ইনভেস্ট
  7. ব্যবসা করা
  8. ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ইনভেস্ট

আপনি টাকা খাটানোর এই উপায় গুলোর মাধ্যমে টাকা দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো। 

১. বন্ড বা ফিক্সডিপোজিট ( Bonds & Fixed Deposits)

বন্ড বা ফিক্সডিপোজিট হলো একটি প্যাসিভ ইনকাম বাড়ানোর সেরা উপায়। বন্ড বলতে বোঝায় একটি ঋণপত্র। এবং ফিক্সডিপোজিট বলতে বোঝায় একটি ব্যাংকে টাকা রাখার সিস্টেম। এই দুই উপায়ে আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। 

বন্ড: বন্ড হলো একটি ঋণপত্র। যা আপনি সরকার বা ব্যাংকের কাছ থেকে কিনতে পারবেন। আপনি যখন একটি বন্ড কিনবেন তখন আপনি সেই প্রতিষ্ঠানের ঋণদাতা হিসেবে গণ্য হবেন। এবং সেই প্রতিষ্ঠান আপনার ঋণগ্রহীতা। আপনি যখন একটি বন্ড কিনবেন তখন তার বিনিময়ে একটি নির্দিষ্ট মুনাফা পাবেন। 

তাছাড়া আপনি এই বন্ড বিক্রি করে দিতে পারেন। যখন আপনার ক্রয়কৃত বন্ডের দাম বেড়ে যাবে তখন তা বিক্রি করে মুলধন লাভ করতে পারবেন। তাই আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে চাইলে বাজারের সেরা কিছু বন্ড বা ঋণপত্র কিনে রাখতে পারেন। এভাবে আপনার টাকা থেকে টাকা আসবে আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও । 

ফিক্সডিপোজিট: ফিক্সডিপোজিট হলো ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখার পদ্ধতি। যেখানে আপনি একটি নিদির্ষ্ট সময়ের জন্য টাকা জমা রাখতে পারবেন। এবং তার থেকে আপনি নিয়মিত টাকা আয় করতে পারবেন। এই টাকা আপনি মাসিক, ত্রিমাসিক বা বার্ষিক পেতে পারেন। 

এছাড়াও আপনি যদি নির্দিষ্ট সময় পরে সেই টাকা ‍উত্তোলন করেন তাহলে একটি ভালো পরিমান টাকা রির্টান পাবেন। তাই আপনি বিনা পরিশ্রমে প্যাসিভ ইনকাম করতে চাইলে এই কাজটি করতে পারেন। 

ঝুকি: এই দুই প্যাসিভ ইনকামেই ঝুকি আছে। কিন্তু আপনি যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সরকার পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বন্ড বা ঋণপত্র কিনেন কিংবা ফিক্সডিপোজিট ক্রয় করেন তাহলে ঝুকির পরিমান অনেক কম হবে। 

২. সোনা বা স্বর্নতে ইনভেস্ট করা

আপনি টাকা খাটানোর জন্য যদি এই উপায়টি বেছে নেন তাহলে আপনার ঝুকির পরিমান কম থাকবে। তাই কেউ যদি কম ঝুকিতে টাকা ইনভেস্ট করে আয় করতে চান তাহলে স্বর্ন কিনে রাখতে পারেন। 

সুবিধা: 

  • মূলধন বৃদ্ধি: সময়ের সাথে সাথে আপনার মুলধন বৃদ্ধি পাবে।
  • বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা: স্বর্ণ সারা বিশ্বে সব জায়গায় চাহিদা রয়েছে। তাই স্বর্ণ বিক্রয় নিয়ে কোন চিন্তা করা লাগে না। 
  • জরুরি অবস্থায় ব্যবহার: জরুরি অবস্থায় আপনি স্বর্ণ বিক্রি করে নগদ অর্থ পেতে পারেন। তাই স্বর্ণ থাকলে আপনার অর্থনৈতিক সংকটে পরতে হয় না। 
  • ঝুকি কম: সময়ের সাথে সাথে প্রতি নিয়ত স্বর্ণের দাম বেড়ে চলেছে। তাই আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন স্বর্ণতে ইভেস্ট করে। 

অসুবিধা: 

  • সংরক্ষণ ঝুঁকি: স্বর্ণ সংরক্ষণ করার জন্য একটু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ স্বর্ণ চুরি হতে পারে। 
  • আয়ের অভাব: স্বর্ণ থেকে নিয়মিত আয় হয় না। তাই আপনি যদি নিয়মিত টাকা পাওয়ার জন্য স্বর্ণতে ইনভেস্ট করেন তাহলে লস করতে পারেন। 
  • ক্রয় ও বিক্রয় খরচ: আপনি যদি স্বর্ণ ক্রয় করেন বা বিক্রয় করেন তখন প্রতি বার একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। যা আপনার লভ্যাংশ কমিয়ে দেয়। 

৩. রিয়েল স্টেইট

রিয়েল স্টেইট বলতে জমি, ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট, কমার্শিয়াল প্রপার্টি, এবং অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তিকে বোঝায়। রিয়েল স্টেইট বিনিয়োগ একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এই মাধ্যম থেকে  আপনি একটি দীর্ঘমেয়াদী আয়ের সুবিধা পেতে পারেন। 

সুবিধা: 

  • মূলধন বৃদ্ধি: সময়ের সাথে সাথে রিয়েল স্টেইট এর মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। এটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ কারীদের জন্য একটি ভালো সুবিধা। 
  • নিয়মিত আয়: রিয়েল স্টেইট এর মাধ্যমে আপনি নিয়মিত আয় করতে পারেন ভাড়া দিয়ে। রিয়েল স্টেইট ভাড়া দেওয়ার এই সুযোগ থাকার জন্য বিনিয়োগকারীগণ রিয়েল স্টেইট বেশি পছন্দ করে থাকে। 
  • ট্যাক্স সুবিধা: অনেক দেশে রিয়েল স্টেইট থেকে ইনকাম করার জন্য ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়। যেমন: ভাড়া দিয়ে টাকা ইনকাম করার জন্য ছাড় পাওয়া যায়। রিয়েল স্টেইট ক্রয় করার সময় ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়। 
  • ইনফ্লেশন হেজ: রিয়েল স্টেইট এর মুল্য বেশি হ্রাস পায় না। সব সময়ই বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার কারণে ইনফ্লেশন হেজ  থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। 
  • এছাড়াও আরো বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে রিয়েল স্টেইট এর থেকে। 

ঝুকি: 

  • উচ্চ প্রাথমিক বিনিয়োগ: সাধারণত রিয়েল স্টেইট এর অল্প পুজি নিয়ে বিনিয়োগ করা যায় না। এই মাধ্যম থেকে টাকা আয় করতে হলে প্রাথমিক পর্যায়েই অনেক টাকার বিনিয়োগ করা লাগে।
  •  অতিরিক্ত খরচ: রিয়েল স্টেইট ক্রয় করার পর তার মেরামত, রক্ষনাবেক্ষণ, বীমা ইত্যাদি খরচের জন্য আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হয়। যার কারণে সবাই এই রিয়েলস্টেইট থেকে আয় পায় না 

আরো পড়ুন: সবাই গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন পাবেন সহজেই

৪. টাকা খাটানোর উপায় গুলোর মধ্যে স্টক মার্কেট একটি জনপ্রিয় মাধ্যম

স্টক মার্কেটে আপনার টাকা ইনভেস্ট করে টাকা আয় করতে পারবেন। টাকা দিয়ে টাকা বানানোর জন্য আপনি এই উপায়টি সম্পর্কে বেশি অভিজ্ঞ হয়ে তারপর ইনভেস্ট করবেন। কারণ এই সেক্টরে টাকা আয় করতে হলে আপনাকে বেশি অভিজ্ঞ হতে হবে। 

সুবিধা: 

  • আয় বেশি: আপনি এই সেক্টরের থেকে অল্প সময়ে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। আপনার টাকা অল্প সময়ের মধ্যে দিগুণ হতে পারে শুধু মাত্র এই উপায় থেকে। 
  • নিয়মিত আয়: আপনি যদি ভালো অভিজ্ঞ হন। তাহলে আপনি শেয়ার বাজার থেকে নিয়মিত টাকা আয় করতে পারবেন। 

অসুবিধা: 

  • ঝুকি বেশি: এই উপায় থেকে আপনি যেমন তাড়াতাড়ি বেশি টাকা আয় করতে পারবেন তেমনি। না বুঝে বা কোন প্রকার ভুল হয়ে গেলে আপনি নিশ্ব হয়ে যেতে পারেন।
  • অনেক পড়াশোনা করতে হয়: এই যদি শেয়ার বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ না হন। তাহলে এখান থেকে টাকা আয় করতে পারবেন না। 

আমাদের ফেসবুক পেইজ ফলো করে রাখুন

৫. মিউচুয়াল ফান্ড: 

মিউচুয়াল ফান্ড হলো ইনভেস্ট করার জন্য একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেখানে আপনি আপনার টাকা খাটানোর ফলে আপনি একটি মুনাফা পাবেন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী। আপনার কাছ থেকে এই কোম্পানি টাকা নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় ইনভেস্ট করে। তার থেকে যা লাভ হয় তার কিছু আপনাকে দিবে আর তারা বাকি রেখে দিবে। 

সুবিধা: 

  • ঝুকি কম: মিউচুয়াল ফান্ড গুলোতে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ থাকে যারা তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আপনারদের টাকা সঠিক জায়গায় ইনভেস্ট করে। যার ফলে আপনার কোন লস হয় না। 
  • নিজের বেশি অভিজ্ঞতা লাগে না: আপনি শুধু মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে টাকা ইনভেস্ট করলে আপনার কোন প্যারা নেওয়া লাগে না। তারাই আপনার সমস্ত কাজ করে দেয়। 

অসুবিধা: 

  • লাভ কম: শেয়ার বাজারের থেকে লাভ তুলনা মুলক ভাবে একটু কম। 

৬. স্টার্টাপ এ টাকা খাটানোর উপায়

স্টার্টাপ হলো নতুন নতুন বিভিন্ন আইডিয়া, ব্যবসা যেগুলো ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে তারা টাকার অভাবে বড় করতে পারছে না। সেই সব ব্যবসায় টাকা খাটানোকে মুলত স্টার্টাপ বলে। আপনি এই সেক্টরে যদি বুঝে শুনে টাকা খাটাতে পারেন তাহলে প্রচুর পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন। 

সুবিধা: 

  • দ্রুত টাকা বাড়ানো যায়: এই পদ্ধতিতে আপনি যদি টাকা খাটাতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে ভালো টাকা আয় করার সম্ভাবনা থাকে। 
  • দেশ বিদেশ ব্যবসার সুযোগ: আপনি আপনার স্টার্টাপ থেকে দেশ বিদেশ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। কারণ ব্যবসা যদি ভালো ভাবে করতে পারেন তাহলে দেশের বাইরে গিয়েও ব্যবাসা করতে পারবেন। 
  • আইডিয়া খুজা লাগে না: আপনি যদি স্টার্টপে বিনিয়োগ করেন তাহলে নতুন ব্যবসার আইডিয়া খুজে বের করা লাগে না। 

অসুবিধা:

  • ব্যবসা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে: আপনি আপনার অভিজ্ঞতা দিয়ে স্টার্টাপ কে বড় করতে হবে। যা একজন অনবিজ্ঞ ব্যক্তি পারবেন না। 
  • ঝুকি বেশি: এই ধরনের কাজে ঝুবি বেশি থাকে। কারণ সঠিকভাবে যদি পরিকল্পনা না করতে পারেন তাহলে লস হবে। 

৭. ব্যক্তিগত ব্যবসা: 

আপনি টাকা খাটানোর জন্য যদি অন্য উপায় গুলো ব্যবহার না করেন। তাহলে নিজে একটি ব্যবসা করতে পারেন। ব্যক্তিগত ব্যবসা থেকে আপনি অনেক বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। কাউকে কোন শেয়ার দেওয়া লাগবে  না। 

সুবিধা: 

  • লাভ বেশি: আপনি যদি নিজেই ব্যক্তিগত ব্যবসা শুরু করেন তাহলে লাভ বেশি হয়। কারণ আপনার মুনাফা অন্য কোন শেয়ার হোল্ডারকে দিতে হবে না। 
  • স্বাধীনাতা: নিজের ইচ্ছা মতো সব কিছু করা যাবে। কারো কাছে কোন জবাব দেওয়া লাগে না। 

অসুবিধা: 

  • কষ্ট বেশি: নিজে যখন একটি ব্যক্তিগত ব্যবসা করবেন তখন নিজেরই সব কাজ করা লাগবে। তাই কষ্ট বেশি হবে। 
  • লস নিজের ভোগ করতে হবে: যেহেতু নিজের ব্যবসা। তাই লাভ এবং লস সবকিছু নিজেরই বহন করা লাগবে। 

৮. ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা খাটানোর উপায়। 

ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা খাটিয়ে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন। আপনা যদি টাকা থাকে তাহলে সেই টাকা খাটিয়ে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন। 

সুবিধ: 

  • সহজেই টাকা ইনভেস্ট করা যায়: আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা ইনভেস্ট করে টাকা আয় করতে চান তাহলে ঘরে বসেই টাকা আয় করতে পারবেন। 
  • আয় বেশি: বর্তমানে ক্রিপ্টোতে সবাই টাকা খাটিয়ে থাকে। এই উপায়ে আপনি আপনার আয় দিগুন করতে পারবেন। 
  • যেকোন জায়গায় বসে কাজ করা যায়: আপনি ক্রিপ্টোতে যেকোন জায়গায় বসে মোবাইলের মাধ্যমেই ইনভেস্ট করতে পারবেন। 

অসুবিধা: 

  • ঝুকি বেশি: এই উপায়ে ঝুকি বেশি রয়েছে। 
  • সকল দেশে বৈধতা নেই: ক্রিপ্টোতে ইনভেস্ট করার জন্য সব দেশে বৈধতা পায়নি। তাই আপনি সব দেশ থেকে ইনভেস্ট করতে পারবেন না। 

উপরে টাকা খাটানোর সেরা ৮টি উপায় দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে আপনার টাকাকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করলেই আপনি দ্রুত ধনী হয়ে উঠতে পারবেন। 

বি:দ্র: যেকোন জায়গায় টাকা ইনভেস্ট করার আগে ভালো করে বুঝে পর্যালোচনা করে ইনভেস্ট করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *