
আজকে এমন ব্যবসার আইডিয়া দেবো আপনাদের যে ব্যবসা গুলো আপনি করতে পারলে আপনি হবেন ভবিষ্যৎ লাখপতি। তাহলে কি সেই ৫টি নতুন ব্যবসা আইডিয়া ২০২৫ সালে শুরু করতে পারবেন। আসুন জেনে নিই।
একটি ব্যবসা করতে হলে যে বিষয় গুলো আগে জানতে হবে।
আপনাকে একটি বিষয় ব্যবসা করার আগে যে বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা হলো ব্যবসায় একদিনে সফলতা পাওয়া যায় না। এখানে ঝুকি রয়েছে। যে ব্যবসা সম্পর্কে আপনি জানেন না তা শুরু করবেন না।
কোন ধরনের ব্যবসা বেছে নিলে কোনদিন পতন হবে না?
আপনাকে ৫টি নতুন ব্যবসা আইডিয়া ২০২৫ সালে শুরু করতে পারবেন তা না বলে আগে এটা বলছি কারণ আপনার যাতে একটি ব্যবসা নির্বাচন করতে সুবিধা হয়। তাই আপনি নিচের বিষয় গুলো আগে দেখে নিন।
- যে ব্যবসা বন্ধ হবে না একটি সিজন পরে।
- প্রোডাক্ট ডিমান্ড থাকবে সব জায়গায়।
- সারা বছর চাহিদা থাকবে।
- প্রফিট মার্জিন বেশি থাকবে।
- ছোট থেকে বড় করার সুযোগ থাকবে।
আপনি যদি একটি ব্যবসা করার আগে এই বিষয় গুলো দেখে নেন তাহলে আপনার ব্যবসা কোনদিন পতন হবে না। জিবনে একটি বড় ব্যবসায়ী হতে পারবেন।
নিচে দেওয়া হলো ৫টি নতুন ব্যবসা আইডিয়া ২০২৫
- বাচ্চদের জুতার ব্যবসা
- স্বাস্থ্যকর স্নাকস
- ইনডোর প্লান্ট
- পেটশপ-কুকুর, বিড়াল
- অ্যাকুরিয়ামের মাছ এবং তার খাবার
১। বাচ্চাদের জুতার ব্যবসা

জুতার ব্যবসা হলো এমন একটি ব্যবসা যা সারাজীবন চলবে। আপনি আমি বা মানুষ পৃথিবীতে যতদিন বেচেঁ থাকবে ততদিন জুতা পড়বে। তাই আপনি এই জুতার ব্যবসাটিকে আরো এস্পেসিফিকেশন করে একটু ইউনিক ভাবে শুধু বাচ্চাদের জুতার সকল ধরনের কালেকশন রাখবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ব্যবসা বেশ তাড়াতাড়ি গ্রো হবে।
বাচ্চাদের জুতার ব্যবসা করতে হলে যা প্রয়োজন হবে?
- প্রথমে জনবহুল এলাকা বা কোন বাজারে একটি ভালো পজিশন দেখে দোকান নিতে হবে।
- দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
- তারপর দোকানের ভালো ডেকোরেশন করতে হবে।
কোথা থেকে পাইকারি জুতা কিনবেন?
উপরের কাজ গুলো হয়ে গেলে আপনার ঢাকা জুতার পাইকারি বাজার ট্রেড সেন্টার, ঢাকা-গুলিস্তান থেকে পাইকারি জুতা কিনে আনতে হবে। আপনার যে কাজটি করতে হবে একই সাইজের বিভিন্ন কালার এবং বাচ্চাদের পায়ের সকল সাইজের জুতার কালেকশন রাখতে হবে। দেখবেন একবার পরিচিতি বেড়ে গেলে মাসে ভালো একটি এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।
বাচ্চাদের জুতার ব্যবসায় লাভ কেমন?
জুতার ব্যবসার ৫০% লাভ হয়ে থাকে। তাছাড়া এই ব্যবসায়ের একটি প্লাস পয়েন্ট হলো প্রোডাক্টের মেয়াদ থাকে অনেক দিন। বলা চলে মেয়াদ থাকে আজীবন। প্রোডাক্ট পচা বা ড্যামেজ হওয়ার সমস্যা নেই।
বাচ্চাদের জুতার ব্যবসা করতে কত টাকা পুজিঁ লাগবে?
একটি জুতার ব্যবসা শুরু করতে প্রথম অবস্থায় দোকান ভাড়া নেওয়ার জন্য এবং ডেকোরেশন বাবদ পজিশন ভেদে খরচ কম বেশি হয়ে থাকবে। ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে হয়ে যেতে পারে। আর প্রথম সকল জুতা কেনার জন্য আপনি যদি ২০, ০০০/- টাকার প্রোডাক্ট আনেন তাহলে দেখবেন অনেক জুতা আনতে পারবেন। এর পর চাহিদা অনুযায়ী জুতার কালেকশন বাড়াবেন।
এছাড়াও আপনি যদি পজিশন এডভান্স কম হয় তাহলে দেখবেন জুতা এবং ডেকোরেশন সব দিয়ে ১ লক্ষ টাকা মধ্যে হয়ে যাবে।
২। স্বাস্থ্যকর স্নাকস

বর্তমানে মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে যারা তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন। তাছাড়া একজন মানুষ কয়েকদিন তেলে ভাজা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে দেখবেন কয়েকদিন পরে অসুস্থ্য হয়ে যাবে। তখন তিনি ডাক্তারের কাছে গেলে অবশ্যই তাকে ঐ অস্বস্থ্যকর খাবার খেতে মানা করবে।
আর আপনি যদি সেখানে একটি স্বাস্থ্যকর স্নাকস এর দোকান দেন তাহলে দেখবেন আপনার খাবারটি পরবর্তিতে সে খাবে। আর যদি একবার খেয়ে সেই কাস্টমার ভালো ফিল পায় তাহলে সে আপনার রেগুলার কাস্টমার হয়ে যাবে। তাই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। দেখবেন ভবিষ্যতে অনেক বেশি গ্রো হবে।
আরো পড়ুন: ইউনিক ৫০টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া – ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকামের আইডিয়া
স্বাস্থ্যকর স্নাকস এর ব্যবসা করতে হলে যা প্রয়োজন হবে?
এই ব্যবাসটি করতে বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। আপনি একটি ছোট দোকান বা ফুটপাতে যেমন ধরনের দোকান তৈরি করে তেমন একটি দোকান তৈরি করতে পারেন। আর যদি বড় করে শুরু করতে চান তাহলে ও করতে পারবেন।
- প্রথমে জনবহুল এলাকা বা বিকাল বেলা মানুষ ঘুরতে যায় এমন একটি স্থান পার্ক বা শপিংমল এর সামনে একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে।
- দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
- তারপর দোকানের ভালো ডেকোরেশন করতে হবে।
যেভাবে স্বাস্থ্যকর স্নাকস তৈরি করবেন?
আপনি এই বিষয়ে ইউনিউব থেকে ধারনা কিতে পারেন। অথবা খাবার তৈরি করার জন্য কোন বই পড়াতে পারেন। তাছাড়া আপনি কোন রান্নার কোর্স করতে পারেন। যেহেতু আপানর ব্যবাসটি একটু ইউনিক তাই প্রথমে খাবার তৈরি করা শিখতে হবে ভালো করে। তারপর ব্যবসাটি করতে নামবেন। অন্যের উপর নির্ভর করে ব্যবসা করতে যাবেন না।
স্বাস্থ্যকর স্নাকস তৈরি করার কাচাঁমাল কোথায় পাবেন?
এই স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করার যে সমস্ত কাচাঁমাল লাগবে তা আপনি আশেপাশের বাজারেই পেয়ে যাবেন। তাই খাবার তৈরির কাচাঁমাল নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।
এই ব্যবসায় লাভ কেমন?
এই ব্যবসায় ও খুব ভালো পরিমান লাভ হয়। বলা যায় ৫০% লাভ করা যায়। তাই আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর স্নাকস ব্যবসা করতে কত টাকা পুজিঁ লাগবে?
এই ব্যবসাটি করতে দোকান তৈরি, কাচাঁমাল ও ডেকোরেশন সব মিলিয়ে আপনার ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। যার থেকে আপনি মাসে ৩০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। তাই এই ব্যবসাটি করতে পারেন আগ্রহী থাকলে।
৩। ইনডোর প্লান্ট

বর্তমানে দালানঘর এবং অনেক ছোট ছোট কোম্পানির বৃদ্ধি হচ্ছে। আর মানুষ তাদের অফিস বা ঘর সাজাতে তাজা সতেজ ইনডোর প্লান্ট ব্যবহার করে থাকে। তাই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। ইনডোর প্লান্ট বিক্রির কম্পিটিটর কম আছে। যার ফলে আপনি তারাতাড়ি গ্রো করতে পারবেন।
ইনডোর প্লান্ট ব্যবসা করতে কি কি লাগবে?
- একটি জায়গা লাগবে যেখানে আপনি চারা গুলো রাখবেন।
- নতুন বীজ বা চারা লাগবে।
- চারা রোপনের জন্য বিভিন্ন স্টাইলের সুন্দর সুন্দর পাত্র লাগবে।
ইনডোর প্লান্ট তৈরি করার জন্য বীজ বা চারা কোথায় পাবেন?
ঢাকা বড় বড় যে নার্সারি রয়েছে সেখানে গিয়ে আপনি চারা কিনতে পারবে। অথবা অনলাইনে আপনি এই ইনডোর প্লান্টের বীজ পেয়ে যাবেন। সেগুলো কিনে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ইনডোর প্লান্ট ব্যবসায় ভাল কেমন?
এই ব্যবসাটিতে অর্ধেকের ও বেশি লাভ করা যায়। কারণ এই চারা গঠন অনুযায়ী আপনি নিজেই দাম নির্ধারন করতে পারবেন।
এই ব্যবসাটিতে পুজি কেমন লাগে?
আপনি যদি এই নতুন ব্যবসা আইডিয়াটি পছন্দ করে থাকেন তাহলে শুরু করতে পারেন। পুজি লাগবে ৪০-৮০ হাজার টাকার মতো।
৪। পেটশপ

আপনি যদি একটি পেটশপ দেন তাহলে বর্তমানের ভালো একটি ব্যবসা দাড় করাতে পারবেন। কারণ এই ব্যবসাটি দিন দিন গ্রো হচ্ছে। আমাদের দেশ বেশি উন্নত হচ্ছে। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত থাকে। কেউ মানুষের সাথে মেশার সময় পায় না। যার ফলে একাকিত্ব অনুভব করে। যার কারণে মানুষ একাকিত্ব দুর করতে বিড়াল, কুকুর, পাখি কিনে থাকে। তাই আপনি এই ব্যবসাটি এখুনি শুরু করলে ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইনডোর প্লান্ট ব্যবসা করতে কি কি লাগবে?
- বাণিজ্যিক লাইসেন্স – স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কাছ থেকে নিতে হবে।
- ভেটেরিনারি অনুমোদন – পোষা প্রাণী বিক্রি করলে পশু চিকিৎসা অধিদপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন হতে পারে।
- ট্রেডমার্ক বা ব্যবসার নাম নিবন্ধন – ব্র্যান্ড তৈরির জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
- শহরের প্রাণকেন্দ্র বা আবাসিক এলাকায় হলে ভালো।
- পশুপ্রেমীদের বেশি সমাগম হয় এমন এলাকা নির্বাচন করুন।
- দোকানের ভেতর পর্যাপ্ত জায়গা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকা জরুরি।
এই ব্যবসাটির সাথে আপনি পোষা প্রাণী গুলোর বিভিন্ন এক্সোসরিজ বা খাবার বিক্রি করতে পারবেন। যার থেকে ভালো টাকা আয় হবে।
পেট শপের লাভ কেমন হতে পারে?
এই ব্যবসাটিতে আপনার প্রফিট মার্জিন ৩০-৪০% থাকবে।
পুজি কেমন লাগবে
- সাধারণত ১-৫ লাখ টাকা দিয়ে ছোট পরিসরে শুরু করা যায়।
- বড় পরিসরে (পোষা প্রাণীসহ) শুরু করতে ৫-১০ লাখ টাকা বা তার বেশি লাগতে পারে।
৫। অ্যাকুরিয়ামের মাছ

অনেক মানুষ তার বাড়িতে সৌন্দর্যের জন্য অ্যাকুরিয়ামের মাছ কিনে থাকে। এই ব্যবসাটিতে ভালো লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আপনি আমাদের দেশে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
অ্যাকুরিয়ামের ব্যবসাটি করতে যেসব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগবে।
- বাণিজ্যিক লাইসেন্স – স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কাছ থেকে নিতে হবে।
- মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমোদন – আমদানি বা বড় পরিসরে চাষ করলে প্রয়োজন হতে পারে।
- ট্রেড লাইসেন্স – ব্রান্ডিং করতে চাইলে ব্যবসার নাম নিবন্ধন করা যেতে পারে।
যে জায়গায় এই ব্যবসাটি করতে পারেন
শহরের বাণিজ্যিক এলাকা, শপিং মল, বা যেখানে অ্যাকুরিয়ামের চাহিদা বেশি এমন একটি জায়গায় আপনি শুরু করতে পারেন অ্যাকুরিয়ারে ব্যবসা।
অ্যাকুরিয়ামের জন্য যে মাছ গুলো রাখবেন
গাপ্পি, গোল্ডফিশ, কোই কার্প, এঞ্জেল ফিশ, প্লাটি, মলি, বেটা ফিশ, ডিসকাস ফিশ ইত্যাদি। এই মাছ গুলো দেখতে অনেক সুন্দর তাই সবাই বেশি কিনে থাকে।
অ্যাকুরিয়ামের ব্যবসাটিতে লাভ কেমন?
ছোট পরিসরে মাসে ৩০,০০০ – ৭০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হতে পারে। বড় দোকানে ও অনলাইন ব্যবসা করলে ১-২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় সম্ভব।
ব্যবাসটি শুরু করতে পুজি কেমন লাগে?
- ছোট পরিসরে শুরু করতে ৫০,০০০ – ২ লাখ টাকা লাগতে পারে।
- বড় দোকান খুলতে ৩-৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
উপসংহার: আজকে আমরা যে ৫টি নতুন ব্যবসা আইডিয়া ২০২৫ দিয়েছে। আপনি তা নিয়ে আরো ভালো করে রিসার্চ করে তারপর শুরু করুন। আপনি যদি আরো নতুন ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। পোস্টটি সম্পূর্ণ দেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।