ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

সেরা ১০টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর নাম

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এতোটা প্রয়োজনীয়  হয়ে উঠেছে। যে আপনি ব্যবসা কিংবা বিনোদন যা কিছু করেন সেখানে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। একটি মানসম্পন্ন ভিডিও বানাতে হলে, একটি ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর প্রয়োজন। এটি শুধু ভিডিওর গুনগত মান উন্নত করে না, বরং দর্শকদের বেশিক্ষণ আকৃষ্ট করে রাখার কাজটি করে থাকে একটি ভালো ভিডিও। 

  1. KineMaster
  2. CapCut
  3. InShot
  4. PowerDirector
  5. FilmoraGo
  6. Adobe Premiere Pro
  7. Final Cut Pro X
  8. DaVinci Resolve
  9. Filmora
  10. Capcut pc

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যাররের গুরুত্ব

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর গুরুত্ব গুলো নিচে দেওয়া হলো। 

  1. পেশাদারিত্ব: একটি ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনার ভিডিওকে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে তোলে। আপনার ব্রান্ডের পরিচিতি সুনাম ধরে রাখতে এবং তৈরি করতে সাহায্য করে।
  2. ক্রিয়েটিভিটি: ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ক্রিয়েটিভ কাজ গুলো আপনার কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবেন। ভিডিও মাঝে সঠিক কাট, ট্রানজিশন, কালার গ্রেডিং এবং মোশন গ্রাফিক্স ব্যবহার করে আপনি দর্শদের আকৃষ্ট করে রাখতে পারবেন। 
  3. প্রেজেন্টেশন উন্নত করা: একটি রেকর্ড করা ভিডিও থেকে অপ্রয়োজনীয় অংশটুকু বাদ দিয়ে তার সাথে কিছু ইফেক্ট, ট্রানজিশন ব্যবহার করে সাধারণ একটি প্রেজেন্টেশনকে প্রফেশনার কোয়ালিটির একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়। 
  4. স্টোরিটেলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি: কাটছাট করে একটি কোন ভিডিও, ছবি, টেক্সট ক্রমানুসারে সাজিয়ে এডিটিং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে একটি ভিডিও মাধমে গল্প বা ঘটনা প্রকাশ করা যায়। 
  5. মার্কেটিং এবং প্রচার: মার্কেটিং করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো ভিডিও বিজ্ঞাপন। একটি বিজ্ঞাপন ভিডিও সাজানোর জন্য ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। 
  6. বিনোদন: নাটক, সিনেমা এবং খেলাদুলা সবখানেই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বা অ্যাপস এর গুরুত্ব অপরিসীম। 

মোবাইলের সেরা ৫ টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

  1. KineMaster: সহজ ইন্টারফেস এবং মাল্টি লেয়ার ফাংশন রয়েছে। ট্রানজিশন এবং বিভিন্ন ইফেক্ট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। তাই কাইনমাস্টার এত বেশি জনপ্রিয়। 
  2. CapCut: ক্যাপকাট টিকটক কোম্পানির একটি সফটয়্যার। টিকটক, শর্টস এবং রিলস এর ভিডিও এডিটিং করার জন্য Catcup বেশি জনপ্রিয়। 
  3. InShot: রিসাইজ, ক্রপ, এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার জন্য ইনসট ভালো। তাছাড়া ভিডিওতে স্টিকার এড করার জন্য Inshot হলো সেরা অপশন। 
  4. PowerDirector: টিউটোরিয়াল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মধ্যে পাওয়ার ডিরেক্টর বেশি জনপ্রিয়। 
  5. FilmoraGo: ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস। রিভার্স ভিডিও এবং মিউজিক মিক্সিং সুবিধা।

মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিট করার ক্ষেত্রে এই ৫টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এই অ্যাপ বা সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে কোন ফি প্রদান করতে হয় না। বিনামূ্ল্যে এই সফটওয়্যার গুলো দিয়ে হাইকোয়ালিটির ভিডিও এডিট করা যায়।

কম্পিউটার বা ল্যাটপট এর জন্য সেরা ৫টি  ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

DaVinci Resolve
  1. Adobe Premiere Pro: পেশাদার ভিডিও এডিটিং করার জন্য এডোবি প্রিমিয়ার প্রো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি একটি প্রিমিয়াম সফটওয়্যার। 
  2. Final Cut Pro X : অ্যাপল ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী একটি সফটওয়্যার। ম্যাগনেটিক টাইমলাইন এবং অত্যন্ত দ্রুত রেন্ডারিং ক্ষমতা।
  3. DaVinci Resolve : এই সফটওয়্যারটি কালার গ্রেডিং এর জন্য বিখ্যাত। তাছাড়া এই সফটওয়্যারটি দিয়ে ভিডিও এডিটিং, ভিএফএক্স, এবং অডিও পোস্ট-প্রোডাকশন করা যায় একটি সফটওয়্যার দিয়েই। 
  4. Filmora: সহজ ইন্টারফেস এর জন্য Filmora জনপ্রিয়। নতুন ইউজারদের জন্য বিশেষ উপযোগী। 
  5. Capcut : সহজ ইন্টারফেস এবং বেশি ইফেক্ট, ট্রানজিশন, রেডি টেক্সট ট্যাম্পপ্লেট এর সুবিধার জন্য Capcut সেরা।
CapCut

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গুলোর সাবস্ক্রিপশন মডেল কেমন?

  1. Adobe Premiere Pro: এটি মাসিক সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক একটি সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে হলে প্রতিমাসে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান ফি প্রদান করতে হবে। 
  2. Final Cut Pro X: এই সফটওয়্যারটি অ্যাপল ইউজারদের জন্য বেস্ট। Final Cut Pro X ব্যবহার করার জন্য এককালীন টাকা দেওয়া লাগে। 
  3. DaVinci Resolve: এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারটির ফ্রি ভার্সন রয়েছে এবং পেইড ভার্সন ও রয়েছে। আপনি ফ্রিতেই অনেক ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। যখন আপনার আরো বেশি এডভান্স অপশন ব্যবহারের প্রয়োজন হবে তখন পেইড ভার্সন ব্যবহার করবেন। কালার গ্রেডিং এর জন্য বিখ্যাত। 
  4. Filmora: সহজ ইন্টারফেইস এর জন্য ফিল্মোরা জনপ্রিয় একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এদের বার্ষিক এবং এককালীন ফি প্রদান করতে হয়।
  5. Capcut: ক্যাপকাট ভিডিও এডিটিং পিসি ভার্সন দিয়ে হাই কোয়ালিটি ভিডিও এডিটিং। সহজ ইন্টারফেইস রয়েছে। নতুনদের জন্য অসাধারণ একটি অ্যাপস। তাদের ফ্রি এবং পেইড দুই ভার্সনই রয়েছে। Capcup এর পেইড ভার্সন ব্যবহার করতে হলে মাসিক পেমেন্ট করা লাগে। 

আরো পড়ুন: ইউটিউব সফলতার গাইডলাইন।

আরো পড়ুন: ১০০% কপিরাইট ফ্রি ১০০টি ব্যাগ্রাউন্ড মিউজিক অডিও লাইব্রেরি

লো-কনফিগার কম্পিউটারের জন্য কোন ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারটি ভালো হবে?

লো কনফিগার বলতে যে সমস্ত কম্পিউটার গুলো আলাদা গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো নেই। প্রসেসর গুলো ১০ জেনারেশনের নিচে। র‌্যাম কার্ড ৮জিবি এবং এসএসডি কার্ড নেই বা ১২০ থেকে ২৫০ জিবির মধ্য অথবা হারডিক্স দিয়ে পিসি বিল্ড করা তাদের লো কনফিগার কম্পিউটার এর মধ্যে ধরা যায়।

আরো সহজেই বললে বলা যায় যে কম্পিউটার গুলো বানাতে আপনার ৫০ হাজার টাকার নিজে খরচ হয়েছে এমন কম্পিটারকে লো কনফিগার কম্পিউটার হিসাবে ধরা যায়। 

এই ধরনের কম্পিউটার গুলোর জন্য CapCut বা Filmora ভিডিও এডিটিং ভালো হবে। এই ধরনের কম্পিটারে যদি Adobe Premiere Pro, Final Cut, DaVinci Resolve ব্যবহার করেন তাহলে ভিডিও রেন্ডারিং এর সময় বেশি লাগবে। বেশি লেয়ার নিয়ে কাজ করতে গেলে কম্পিউটার হ্যাঙ্ক করবে আরো অনেক সমস্যা দেখা দিয়ে পারে।

তার পরও যদি আপনার ব্যবহার করতে হয় এই ভারি সফটওয়্যার গুলো তাহলে আপনি DaVinci Resolve এর ফ্রি ভার্সনটি ব্যবহার করতে পারেন। 

ফ্রিতে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ডাউনলোড এবং ব্যবহার।

DaVinci Resolve, Filmora এবং CapCut হলো নতুন ইউজারদের জন্য খুবই কার্যকরী ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার গুলোর ফ্রি এবং পেইড দুই ভার্সন রয়েছে। 

এই ভিডিও এডিটিং অ্যাপস গুলো দিয়ে সব ধরনে ভিডিওর কাজ করা যায়। কিন্তু যখন দ্রুত এবং ক্রিয়েটিভ কাজ করা হয় তখন পেইড ভার্সনে যাওয়া লাগে। ইউটিউব এর ভিডিও তৈরি করা যায় সহজেই। ব্লগ ভিডিও, ফানি ভিডিও এবং বিভিন্ন টিউটোরিয়াল ভিডিও এডিট করা যায় সহজেই। 

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গুলো দিয়ে প্রায় সকল নতুন ইউজার বা অনেক বড় বড় ইউটিউবারগণ তাদের নিজের ভিডিও বা অন্যের ভিডিও এডিট করে থাকে। এই দুইটি সফটওয়্যারের ইন্টারফেস এবং সেটিংস একই। সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে ডিফল্ট অনেক লাইট ইফেক্ট, ট্রানজিশন এবং ফন্ট ট্যাম্পেলেট রয়েছে।

সফটওয়্যার তিনটি ব্যবহার করে ইউজার তার সৃজনশীলতা ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। কোন ইউজার  যদি ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ হয় তাহলে এই সফটওয়্যার দিয়ে এডভান্স লেবেল এর ভিডিও এডিট করতে পারবেন। 

প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মধ্যে DaVinci Resolve,  Adobe Premiere Pro ‍এবং Final Cut Pro X. এগুলো দিয়ে যে কাজ করতে পারবেন। এডভান্স কিংবা সহজ সকল ধরনের কাজ করতে পারবেন এই সফটওয়্যার দিয়ে। মোশন গ্রাফিক্স, মুভি, নাটক, বিজ্ঞাপন ভিডিও,বিয়ের ভিডিও এডিটিং, ইউটিউব ভিডিও, পার্সনাল ভিডিও এবং ব্যবসার কাজে ব্যহারের জন্য এই ধরনের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার একান্ত প্রয়োজনীয়।

কোনটি সবচেয়ে ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আছে অনেক। তার মধ্য হতে জনপ্রিয় বা সেরা অ্যাপস গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। তবুও আবার এগুলোর মধ্য হতে কোনটি সবচেয়ে ভালো তাহলে বলতে গেলে কথাটি এক কথায় বলা যাবে না। 

কারণ একটি সফটওয়্যার এর সকল ফিচার সেরা হয় না। যেমন DaVinci Resolve জনপ্রিয় তার কালার গ্রেডিং ক্ষমতার জন্য।DaVinci Resolve দিয়ে যেত ভালো করে ভিডিওর কালার গ্রেডিং করা যায় তা আর অন্য কোন সফটওয়্যার দিয়ে করা যায় না। 

আবার এডোবি প্রিমিয়ার প্রো দিয়ে অডিওর কাজ এবং মোশন গ্রাফিক্স এর কাজ যেত ভালো করা যায় তা অন্য কোন সফটওয়্যার দিয়ে করা যায় না। 

তারপরেও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে যদি বলি তাহলে সবচেয়ে ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার হলো Adobe Premiere Pro.

Share Now

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *