মালিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে

দ্রুত মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে

হ্যালো বন্ধুরা আপনার যদি একটি পুরাতন মোটরসাইকেল থেকে থাকে এবং সেটি আপনি বিক্রি করতে চান তাহলে আপনি যার কাছে বিক্রি করবেন তাকে কিভাবে মালিকানা পরিবর্তন করে দেবেন। অথবা আপনি যদি একটি পুরাতন মোটরসাইকেল কিনতে চান তাহলে আপনি কিভাবে মালিকানা পরিবর্তন করে নিজের নামে আনবেন এই বিষয় নিয়ে আজকের পোস্ট।

আজকের দেখানো নিয়মে শুধু মোটরসাইকেল নয় আপনি সিএনজি, প্রাইভেটকার, বাস ও ট্রাক ইত্যাদি প্রায় সকল ধরনেরই গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন একই নিয়মে।

মালিকানা পরিবর্তনের গুরুত্ব

আপনি যদি একই পুরাতন গাড়ি কেনার পর যদি মালিকানা পরিবর্তন না করেন সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আইনের জটিলতা এবং আর্থিক জটিলতায় ভুগতে হবে। যদি আপনি পুরাতন গাড়ি ক্রয় করার পর ৬০ দিনের মধ্যে গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন না করে নেয় তাহলে কিন্তু তার এক মাসের কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা নিতে পারে আইন।

গাড়ির মালিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনি যদি সরাসরি গাড়ির মালিকের কাছ থেকে গাড়িটি করে করে থাকেন তাহলে তার কাছ থেকে যে সকল কাগজপত্র অফিসে জমা দিতে হবে।

১. টিও ও টিটিও ফরম

এই ফরমটিতে আপনাকে স্বাক্ষর করতে হবে এবং এখানে যে সকল তথ্য চাইবে সে সকল সঠিকভাবে তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।

২. ব্যাংক জমার রশিদ

মোটরসাইকেল বা যেকোনো গাড়ির পরিবর্তন করার যে ব্যাংক ফিরেছে সেটি প্রদান করে ব্যাংক থেকে রশিদ আনতে হবে।

৩. মূল রেজিস্ট্রেশন সনদের কপি

আপনি গাড়ির মূল রেজিস্ট্রেশন সনদের কপি অথবা কোন কোন সময় মূল রেজিস্ট্রেশনের সনদ অফিসে জমা দিতে হবে।

৪. ছবিসহ ননজুডিশিয়াল এভিডেভিড

ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় দুজনকে ৩০০ টাকা করে দুইটি ৩০০ টাকা ও ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে ছবিসহ হলফনামাযুক্ত দুই জনারি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও দুই কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।

৫. ছ ফরমে আবেদন

ক্রেতা ও নমুনার স্বাক্ষর সহ বাবা ও মায়ের নাম সহ ইংরেজিতে লিখে ফরমটি ফিলাপ করতে হবে।

৬. টিন সার্টিফিকেটের কপি

এটি কিছু কিছু ক্ষেত্রের টিন সার্টিফিকেটের কপি প্রয়োজন হতে পারে।

৭. ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি

যিনি ক্রেতা তার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি অফিসে দিতে হবে।

আপনি যদি মুল মালিক ব্যতীত অন্য অরিস সূত্রপ্রাপ্ত কোন মালিকের কাছ থেকে গাড়ি ক্রয় করতে চান তাহলে উপরোক্ত কাগজের সাথে আপনার আরো দুটি কাগজের প্রয়োজন হবে। যেমন,

  • ১. কোর্ট বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত ওয়ারিশান সার্টিফিকেট
  • ২. মূল ব্যক্তি যদি মৃত্যু হয় তাহলে মৃত্যু সনদের ফটোকপি।

উপরে যে সকল কাগজপত্রর কথা বলা হয়েছে আপনি মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য অফিসে এইগুলো কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন।

মালিকানা পরিবর্তনে কত টাকা ফি জমা দিতে হয়?

গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন করতে কত টাকা ফি এটা নির্ভর করে আপনার গাড়ি কি ধরনের বা আপনার গাড়িটির সিসি কত?

১. এক নাম্বার উপায় হলো আপনি যে গাড়িটি বিক্রি করবেন সেই গাড়িটির যেকোনো একটি কাগজ নিয়ে ব্যাংকের জমা দিলে তারা বলে দিবে কত টাকা আপনাকে ব্যাংকে ফি দিতে হবে।

২. দুই নাম্বার হল আপনি নিজেই কিন্তু গাড়িটির কত ফি লাগবে সেটি বের করতে পারবেন বিআরটিএ এর মল ওয়েব সাইট থেকে। আপনি বিআরটিএ এর ওয়েবসাইটের ফি ক্যালকুলেটর অপশন থেকে আপনার গাড়িটির কত টাকা ফ্রি প্রয়োজন সেটি বের করতে পারবেন।

প্রথমে আপনি বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে যান ” bsp.brta.gov.bd ” সার্স করুন। তারপর ওয়েবসাইটের হোমপেজে গিয়ে নিচের দিকে যান। সেখানে আপনি দেখতে পারবেন ফি ক্যালকুলেটর সেখানে ক্লিক করুন।

আপনি এখানে দুটি অপশন পাবেন সেখানে ” নিবন্ধিত মোটরযানের ফি ” অপশনে ক্লিক করুন।

এখানে আপনাকে কিছু তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে যেমন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার, গাড়িটির ফ্রি সমূহ যেমন ” transfer of ownership ” সিলেক্ট করবেন। তারপর এখানে একটি ক্যাপশন কোড পাবেন সেই কোডটির নিচে লিখে ক্যালকুলেটর অপশন এ ক্লিক করবেন। তাহলে কিন্তু আপনি দেখতে পারবেন আপনার গাড়িটির ফি কত টাকা দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ

ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম

ড্রাইভিং লাইসেন্স কত প্রকার ও কি কি শ্রেণি রয়েছে

পেশাদার ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মধ্যে পার্থক্য

ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শিখে ফ্রি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও যাতায়াতে ভাতা

মালিকানা পরিবর্তন করতে অফিসে কয়দিন উপস্থিত হতে হয়

দেখুন আপনি যদি আপনার গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন করতে চান একদিনের মধ্যেও করতে পারবেন। তাই ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলের কাগজপত্র যদি রেডি থাকে তাহলে আপনি গিয়ে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে গাড়িটির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য সকল কার্যক্রম একদিনে সম্পূর্ণ করতে পারবেন।

সাথে আপনার গাড়িটিকে নিয়ে যেতে হবে গাড়িটি সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার দেখে যদি সে সবকিছু ঠিক আছে মনে করে তাহলেই কিন্তু সেই দিনই আপনাকে গাড়িটি ব্যবহার করার জন্য একটি এপারমেন্ট স্লিপ দিবে। এবং যখন ফাইনালি সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হবে তার কিছুদিন পরেই আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ যাবে। সেই সময় অনুযায়ী আপনি গিয়ে বায়োমেট্রিক প্রদান করলে তার কিছুদিন পরেই আপনার মালিকানা পরিবর্তন এর স্মার্ট কার্ড টি পেয়ে যাবেন।

তো বন্ধুরা এই ছিল সম্পূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যদি আপনারা আরো কিছু বিষয় জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে দিতে পারেন।

Share Now

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *